শিশুর স্বাস্থ্যকর খাবারের প্লেট একটি গাইড, যা শিশুদের সঠিক খাবার খেতে এবং শারীরিক কার্যক্রমে অংশ নিতে উৎসাহিত করে। এটি স্বাস্থ্যকর খাবারের উদাহরণ দেয় এবং শারীরিক সক্রিয়তার গুরুত্ব তুলে ধরে।
১. প্লেটের অর্ধেক অংশ শাকসবজি (Veggies)
প্রথমে, পুরো প্লেটের অর্ধেক অংশে শাকসবজি রাখতে হবে। এটি আপনার খাদ্য তালিকায় পুষ্টির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ যোগ করবে।
বৈচিত্র্যময় শাকসবজি: যত বেশি শাকসবজি এবং বৈচিত্র্য থাকবে, ততই ভালো। শাকসবজি নির্বাচন করুন যেমন: পালং শাক, ব্রোকলি, টমেটো, গাজর, শিমলা মরিচ, কুমড়া, বাঁধাকপি ইত্যাদি।
ফ্রেঞ্চ ফ্রাইস বা আলু শাকসবজি হিসেবে ধরা হয় না, কারণ এগুলি রক্তের শর্করায় দ্রুত প্রভাব ফেলে। আলু ও ফ্রেঞ্চ ফ্রাইস পরিহার করুন।
২. ফলমূল (Fruits)
প্রতিদিন সব রঙের ফল খান: প্রতিদিন বিভিন্ন রঙের ফল খাবার চেষ্টা করুন। ফলগুলো সম্পূর্ণ (বিনা প্রক্রিয়াজাত) এবং টুকরো করে খাওয়ার চেষ্টা করুন।
উদাহরণ: আপেল, কলা, কমলা, আম, আনারস, ব্লুবেরি, পেঁপে, স্ট্রবেরি।
ফলের রসের পরিবর্তে, সম্পূর্ণ ফল খাওয়া বেশি উপকারী। যদি রস খেতেই চান, তবে এক গ্লাসের বেশি নয়।
৩. সম্পূর্ণ শস্য (Whole Grains)
শস্য নির্বাচন করুন: যতটা সম্ভব প্রক্রিয়াজাত শস্য (যেমন সাদা চাল, সাদা রুটি, পাস্তা) পরিহার করুন এবং সম্পূর্ণ শস্য খেতে চেষ্টা করুন। এর মধ্যে রয়েছে:
পুরো গম (Whole wheat), বাদামি চাল (Brown rice), কুইনোয়া (Quinoa), হোল গ্রেইন পাস্তা, ১০০% পুরো গমের রুটি।
এগুলি রক্তের শর্করা ও ইনসুলিনের উপর কম প্রভাব ফেলে।
৪. স্বাস্থ্যকর প্রোটিন (Healthy Proteins)
উদ্ভিদভিত্তিক প্রোটিন: বিন, মটর, বাদাম, বীজ ইত্যাদি উদ্ভিদভিত্তিক প্রোটিন বেছে নিন।
প্রাণীজ প্রোটিন: মাছ, ডিম, মুরগির মাংসও খেতে পারেন। তবে লাল মাংস (গরু, ভেড়া) কম খাওয়ার চেষ্টা করুন এবং প্রক্রিয়াজাত মাংস (বেকন, সসেজ, হট ডগ) এড়িয়ে চলুন।
৫. স্বাস্থ্যকর চর্বি (Healthy Fats)
স্বাস্থ্যকর তেল ব্যবহার করুন: রান্না ও স্যালাডে স্বাস্থ্যকর তেল যেমন অলিভ তেল, ক্যানোলা তেল, সূর্যমুখী তেল বা মটরশুঁটির তেল ব্যবহার করুন।
চর্বির উৎস: বাদাম, আভোকাডো (Avocado), চিয়া সিড (Chia seeds), ফ্ল্যাক্স সিড (Flax seeds) ইত্যাদি।
৬. দুধজাতীয় খাবার (Dairy Products)
কম পরিমাণে দুধজাতীয় খাবার খান: দুধ, সাদামাটা দই এবং কম চিনি যুক্ত পনির বেছে নিন। দুধ ও দুধজাতীয় পণ্য ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি এর ভালো উৎস, তবে অতিরিক্ত পরিমাণে না খাওয়াই ভালো।
৭. পানি (Water)
পানি পান করুন: প্রতিদিন অন্তত ৮ গ্লাস পানি পান করুন। পানি আমাদের শরীরের তৃষ্ণা মেটানোর সবচেয়ে ভালো পন্থা।
চিনিযুক্ত পানীয়, সোডা বা ফলের রস পরিহার করুন। এগুলি অতিরিক্ত ক্যালোরি ও চিনির উৎস হয়ে দাঁড়ায়।
৮. শারীরিক কার্যকলাপ (Physical Activity)
নিষ্ক্রিয় জীবনধারা এড়িয়ে চলুন: প্রতি দিন এক ঘণ্টা শারীরিক কার্যকলাপ করুন। এতে আপনার স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এবং পুষ্টির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত হবে।
Leave a Comment